মার্কো পোলো বললেন, “সম্রাট, এবার যে আমাকে বিদায় জানাতে হবে।”
সম্রাট অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন? কোথায় যাবে তুমি?”
“নিজের দেশে সম্রাট।”
“আরও কিছুদিন এখানে থেকে গেলে হতো না? তোমার কি কোন অসুবিধে হচ্ছে এখানে?”
“না সম্রাট, আপনার দরবারে যে সম্মান পেয়েছি, ভালোবাসা পেয়েছি, তা পৃথিবীর অন্য কোথাও পেতাম না – এবিষয়ে আমি নিশ্চিত। কিন্তু আজ এতো বছর পরে নিজের দেশে ফিরতে মন চাইছে।”
অনিচ্ছা সত্ত্বেও কুবলাই খান সন্মত হলেন, “বেশ, তোমাকে আটকাবো না। শুধু একটা অনুরোধ করবো। পৃথিবীর মানুষের কাছে আমার এই দেশ আজও অচেনা। সময়ের বিনিময়ে তুমি যে অভিজ্ঞতা এখানে অর্জন করলে, তার কথা লিখো, মানুষকে জানিও।”
আজ থেকে প্রায় ৭০০ বছর আগে ঘটে যাওয়া দুই অসমবয়সী এবং ভিনদেশি বন্ধুর বিচ্ছেদের প্রেক্ষাপট যদি মানুষের ভাষায় কথা বলতে পারতো, তাহলে হয়তো এই কথোপকথন ইতিহাসের কোন পাতায় নিশ্চয়ই স্থান পেতো। আজ সেই হারিয়ে যাওয়া সূত্র ধরেই চীন দেশ সম্পর্কে আমার লেখার সূত্রপাত।
শেষ পাঁচ বছর এই দেশে কাটানোর সুবাদে অনেক স্মৃতি জমা হয়েছে ক্যামেরা আর মনের লেন্সে। সত্যি কথা বলতে, ছবি তোলার প্রতি আমার আগ্রহ, ভালোবাসা – সবই গড়ে উঠেছে এই সময়ে। তাই চীন দেশ সম্পর্কে লেখার শুরুটা করলাম সেই শহরকে দিয়ে যেখানে আমি কাটিয়েছি জীবনের সবথেকে শিক্ষণীয় পাঁচটা বছর।
“গুয়াংজু? সেটা আবার কোথায় রে?”
অমিতাভ ঘোষের নতুন বই “Smoke and Ashes: A writer’s journey” তে লেখক লিখছেন,
“…it seems to me that my blankness in relation to China was not the result of a lack of curiosity, or opportunity, or anything circumstantial. I am convinced that it was the product of an inner barrier that has been implanted in the minds of not just Indians but also Americans…And as the years go by and China’s shadow lengthens upon the world, these barriers are clearly hardening, especially in India and the United States.”
যার বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়ায় –
“আমার কাছে মনে হয়, চীনের ব্যাপারে আমার না জানা শুধুমাত্র আমার কৌতূহলের অভাব, সুযোগের অভাব, বা কোন পরিস্থিতির ফল নয়। আমি নিশ্চিত যে এই না জানা মনের ভেতরে একটা বাঁধা থেকে তৈরি হয়েছে, যে বাঁধা শুধুমাত্র ভারতীয়দের নয়, আমেরিকানদের মনেও রয়েছে… এবং যত বছর যাচ্ছে এবং পৃথিবীর উপর চীনের ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘায়িত হচ্ছে, এই বাঁধাটা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে, আরও কঠোর হচ্ছে, বিশেষত ভারত এবং আমেরিকায়।”
যেখানে পুরো চীন দেশ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান এতো সীমিত, সেখানে দেশের একটা শহরের সম্পর্কে অজ্ঞতাই স্বাভাবিক। কিন্তু আজকের এই লেখায় আমাদের পরিচয় হবে এমন এক শহরের সাথে, যার মাথায় একদিন ছিল বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম শহরের মুকুট।
নদীতীরের শহর
চীনের নদী বলতে দুটো নদীর নাম আমাদের ছোটবেলার ভূগোল বইয়ের পাতা থেকে মনে আসে – ইয়াংজি আর হোয়াং হো। এই দুটো নদী চীনের মাঝ বরাবর অবস্থিত হওয়ায় দেশটাকে উত্তর আর দক্ষিণে ভাগ করেছে। দক্ষিণ চীনের প্রধান নদী হল ঝুজিয়াং (Zhujiang), ইংরাজি ভাষায় যাকে বলা হয় পার্ল রিভার (Pearl River)। এটা চীনের তৃতীয় দীর্ঘতম নদী।
অবশ্য একে ঠিক নদী না বলে নদী ব্যবস্থা বলা যেতে পারে, কারণ ইউনান-গুইঝু মালভূমি থেকে উদ্ভূত চারটি নদী মিলে এর সৃষ্টি। এই চারটে নদী হল – শি নদী, লিউশি নদী, বেই নদী এবং ডং নদী। এই চারটে নদী প্রবাহিত হয়েছে চীনের ছ’টা প্রদেশের মধ্যে দিয়ে অসংখ্য উপনদী তৈরি করতে করতে।
এই চার নদীর প্রথম যে শহরে দেখা হয়, তার নাম গুয়াংজু (Guangzhou)। একসাথে মিলিত হবার পরে তারা পার্ল নদী নাম নিয়ে আরও ৭০ কিলোমিটার বয়ে গেছে এই শহরের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ চীন সাগরে (South China Sea) মিশে যাবার আগে। পার্ল নদী যেখানে সাগরের সাথে মিশেছে, সেই ডেল্টা অঞ্চলে গড়ে উঠেছে এক নগর কেন্দ্রিক সভ্যতা – পোশাকি ভাষায় যার নাম পার্ল রিভার ডেল্টা মেট্রোপলিটন অঞ্চল (Pearl River Delta Metropolitan Area)।
বেশ কিছু বড় শহর এই অঞ্চলে অবস্থিত। চীনের শহর বলতে যে তিনটে শহরের নাম আমাদের মনে আসে, বেইজিং, সাংহাই আর হংকং, তার মধ্যে হংকং শহর এই অঞ্চলে অবস্থিত। হংকং থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শেনঝেন (Shenzhen), যে শহরকে বলা হয় চীনের সিলিকন ভ্যালি। আর শেনঝেন থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে গুয়াংজু।
এই শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা পার্ল নদী আগে চওড়া ছিল প্রায় ২০০০ মিটার, যার জন্য এর নাম ছিল ‘মুক্তো সাগর’। মনে করা হয়, এই নদীর তলদেশে একটা বিশাল পাথর ছিল। এই পাথর এতোটাই গোলাকার এবং মসৃণ যে দেখতে অনেকটা বড়, ঝলমলে মুক্তোর মতো। তাই এই পাথরের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘সী পার্ল’, আর নদীর নাম ‘পার্ল’। ধীরে ধীরে এই নদীর জল শুকিয়ে আসে, আর এখন এর চওড়া মাত্র ১৮০ মিটার। আমাদের কলকাতা আর হাওড়ার মাঝে হুগলী নদী এর তিন গুণ – প্রায় ৪৫০ মিটারের মত চওড়া।
ব্যবসা বাণিজ্যের শহর – সেদিনের ক্যান্টন
নদী আর সমুদ্রের সংযোগ স্থলে অবস্থিত হবার কারণে, প্রাচীন কাল থেকে গুয়াংজু শহর ব্যবসা বানিজ্যের জায়গা। বিদেশীদের কাছে এই শহর পরিচিত ছিল ক্যান্টন (Canton) নামে। আজও আন্তর্জাতিক উড়ান ম্যাপে এখানকার এয়ারপোর্ট এর নাম ক্যান্টন। ক্যান্টন লিখে গুগল সার্চ করলে অনেক লেখা পাওয়া যাবে। Stephen Platt তাঁর বইতেও পুরনো দিনের গুয়াংজু বা ক্যান্টনের খুব ভালো বর্ণনা দিয়েছেন (বইটার লিঙ্ক)। এখানে আমি অল্প একটু লিখি যতটা এই পর্বের জন্য, যে জায়গার কথা বলতে যাচ্ছি তার সম্পর্কে একটা ধারণা করার জন্য, যথেষ্ট হবে বলে মনে হয়।
১৮ শতকের শেষের দিক। ১৬৪৪ সালে ছিং (Qing) রাজবংশ চীনের ক্ষমতায় আসার পর কেটে গেছে আরও দুটো শতক। ছিং সামাজ্র্যের সূর্য তখন মধ্য গগনে। ১৯১২ সাল আসতে তখনও অনেক দেরী, যখন ২৬৮ বছরের এই সাম্রাজ্যের পতন ঘটিয়ে আজকের গণতান্ত্রিক চীনের প্রতিষ্ঠা হবে। সেই সময় ক্যান্টন ছিল বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম শহর – লন্ডন আর বেইজিং এর ঠিক পরেই। পৃথিবীর সবথেকে প্রাচীন এবং দীর্ঘতম সামুদ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের পথ, যা পরিচিত ছিল Maritime Silk Route নামে, শুরু হতো এই ক্যান্টন শহর থেকে। এখান থেকে শুরু হয়ে Maritime Silk Route ভারত মহাসাগর এবং লোহিত সাগর দিয়ে ১০০টারও বেশী দেশ অতিক্রম করে পূর্ব আফ্রিকা এবং ইউরোপে পৌঁছত।
প্রথম ওপিয়াম যুদ্ধের আগে পর্যন্ত, ১৮৪২ সাল অবধি, ক্যান্টন ছিল পুরো চীন দেশের একমাত্র বন্দর শহর যার মাধ্যমে বিদেশী ব্যবসা বানিজ্য চলতো। চীনের আর অন্য কোন বন্দর বিদেশী ব্যবসার জন্য খোলা ছিল না।
প্রথম ওপিয়াম যুদ্ধে ব্রিটেন জয়লাভ করার পর সাংহাই আর হংকং সহ বেশ কয়েকটা বন্দর বিদেশী ব্যবসা বানিজ্যের জন্য অধিকার করে। পুরনো গুয়াংজু ছিল সরু রাস্তা আর প্রচুর জনসংখ্যা সমেত একটা শহর। ১৯২০ এবং ১৯৩০ এর দশকে শুরু হয় এই শহরের আধুনিকীকরণ। রাস্তা চওড়া করা থেকে শুরু করে অসংখ্য পার্ক তৈরি করা – এই সময় থেকে শুরু হয়েছিল। ১৯৮০ এর দশক পর্যন্ত উত্তরে পাহাড় আর পশ্চিমে অসংখ্য জলাভূমি থাকার জন্য এই শহরের বৃদ্ধি সীমাবদ্ধ ছিল পূর্বদিকের সমতল ভূমিতেই। কিন্তু যতো মানুষের আসা যাওয়া বাড়তে লাগলো, শহরও প্রসারিত হতে শুরু করলো উত্তর আর দক্ষিণ দিকে। কিন্তু আজও আসল শহর পড়ে রয়েছে পার্ল নদীর কোল ঘেঁষে।
ব্যবসা বাণিজ্যের শহর – আজকের গুয়াংজু
আজ গুয়াংজু শহরের জনসংখ্যা প্রায় ১৪.৫ মিলিয়ন। এলাকা প্রায় ৭৪৩৪ বর্গ কিলোমিটার। সমস্ত চীন দেশের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম শহরের শিরোপা আজ গুয়াংজুর মাথায়, বেইজিং আর সাংহাই এর ঠিক পরেই। এতো বড় এই শহরের মধ্যে রয়েছে ১১টা জেলা। শহরের মধ্যে জেলা? হ্যাঁ, চীনের প্রশাসনিক বিভাগ (Administrative Divisions) আমাদের ভারতবর্ষের থেকে আলাদা।
- চীন দেশ প্রথমে তিন ভাগে বিভক্ত – প্রদেশ (Province), স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল (Autonomous region), এবং পৌরসভা (Municipality)। আজকের দিনে চীনে ২৩টি প্রদেশ, ৫টি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, ৪টি পৌরসভা এবং ২টি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল আছে।
- প্রদেশ এবং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলগুলি তারপর ভাগ হয়েছে শহর (City), স্বায়ত্তশাসিত প্রশাসনিক অঞ্চল (Autonomous prefectures), কাউন্টি (County) এবং স্বায়ত্তশাসিত কাউন্টিতে (Autonomous county)।
- কাউন্টি এবং স্বায়ত্তশাসিত কাউন্টিগুলি এর পর টাউনশিপ, জাতিগত টাউনশিপ এবং টাউন এ বিভক্ত। বড় শহর গুলোকে ভাগ করা হয়েছে জেলাতে।
গুয়াংজুর মধ্যে রয়েছে ১১ টা জেলা – Yuexiu, Liwan, Haizhu, Tianhe, Baiyun, Panyu, Huadu, Nansha, Zengcheng, এবং Conghua। নামগুলো ইংরেজিতেই লিখলাম।
গুয়াংজু শহর দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশের রাজধানী। ব্যবসা বানিজ্যের ঐতিহ্য সময়ের সাথে সাথে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে এই শহরে তথা সমস্ত গুয়াংডং প্রদেশে। গুয়াংডং প্রদেশ শেষ ৩৪ বছর ধরে দেশের মধ্যে সবথেকে বেশী GDP উৎপন্নকারী প্রদেশ।
- ২০২২ সালে গুয়াংডংয়ের GDP ছিল ১২.৯ ট্রিলিয়ন RMB ছিল, মানে প্রায় ১.৭৭ ট্রিলিয়ন USD। ভারতের সবথেকে বেশী GDP উৎপন্নকারী রাজ্য মহারাষ্ট্রের ২০২২ সালে জিডিপি ছিল ০.৩৬ ট্রিলিয়ন USD।
- ব্যবসাবাণিজ্যের দিক থেকে দেখলে ২০২২ সালে গুয়াংডং প্রদেশের আমদানি রফতানির মোট মূল্য ৮.৩১ ট্রিলিয়ন RMB, যার ফলে গত ৩৭ বছরের মতো সেই বছরও গুয়াংডং প্রদেশ দেশের মধ্যে প্রথম হয়েছিল।
আজকের গুয়াংজু তার বাণিজ্যের জন্য সারা দেশ এবং পৃথিবী জুড়ে পরিচিত।
- সমস্ত দেশের মধ্যে এই শহরে ব্যবসা করার খরচ সব থেকে কম।
- আজ অবধি, বিশ্বের সব থেকে দামি ৫০০ কোম্পানির প্রায় ৬০ শতাংশ গুয়াংজুতে ব্যবসা করার জন্য বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে প্রায় 120টা কোম্পানির হেড কোয়ার্টার বা আঞ্চলিক হেড কোয়ার্টার এই শহরে অবস্থিত।
- ১৯৫৭ সাল থেকে প্রতি বছর এখানে দু’বার বিশ্ব বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়, যার নাম ক্যান্টন ট্রেড ফেয়ার। প্রথম মেলা হয় এপ্রিল-মে মাসে, আর দ্বিতীয় মেলাটা হয় অক্টোবর- নভেম্বর মাসে। এই মেলায় থাকে ইলেকট্রনিক্স, হার্ডওয়্যার, যন্ত্রপাতি, খাবারদাবার, ঘরের জিনিসপত্র এবং কাপড় চোপড়। এই মেলা দেশের মধ্যে সবথেকে পুরনো বাণিজ্য মেলা। ২০২২ সালে পৃথিবীর ২২৯টা দেশ এবং অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা এই মেলায় যোগ দিয়েছিল।
আমার ক্যামেরায় একটুকরো সন্ধ্যের গুয়াংজু
আমি থাকি Haizhu জেলায়। পার্ল নদীর দক্ষিণ তীরে এই জেলার অবস্থান। Haizhu জেলার সাথে নদীর উত্তরে যোগ রয়েছে আরও দুটো জেলার, একটার নাম Tianhe, আর অন্যটা Yuexiu।

Yuexiu জেলা পুরনো দিনের ব্যবসা বানিজ্যের কেন্দ্রস্থল ছিল, যাকে ইংরেজিতে বলে Central Business District বা CBD, আর আজ CBD এর খেতাব Tianhe জেলার মাথায়। Haizhu জেলা অনেকটাই আবাসিক, মানে residential। নদীর উল্টোদিকে ওই যে সব আলোয় মোড়া উঁচু উঁচু বাড়ি, সেগুলো সব Tianhe জেলায় অবস্থিত। এর মধ্যে কোনটা অফিস বাড়ি, কোনটা হোটেল, আবার কোনটা আধুনিক শপিং মল।
সন্ধ্যে হবার সাথে সাথে এই বাড়িগুলো সেজে ওঠে রঙিন ঝলমলে নিয়ন লাইট দিয়ে, পার্ল নদীর বুক চিরে মন্থর গতিতে চলতে শুরু করে পর্যটকে ভরা বিলাসবহুল ক্রুজ জাহাজ, জেগে ওঠে নদীর দু’পারের শহুরে নাইটলাইফ। এই ছবিতে তারই কিছুটা প্রতিফলন। আর ওই যে একদম ডানদিকে সবথকে উঁচু বাড়িটা – ওটার নাম CTF Finance Centre। ৫৩০ মিটার উঁচু এই বাড়িটা এই শহরের সবথেকে উঁচু বাড়ি এবং বিশ্বে অফিস বাড়ির উচ্চতার দিক থেকে এর স্থান ৬ নম্বরে। আর আমি যেখানে দাঁড়িয়ে এই ছবিটা তুলছি, সেটা একটা ব্রিজে ওঠার সিঁড়ি। নদীর দক্ষিণ আর উত্তর তীরের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী এরকম ১০টা ব্রিজ আছে। একদিন ইচ্ছে আছে এই ব্রিজগুলো নিয়ে একটা ফটো অ্যালবাম বানানোর।
নদীর দুটো তীর ঘেঁষে সরু একফালি করে রাস্তা রয়েছে। এই রাস্তা শুধু মানুষের হাঁটা বা দৌড়নোর জন্য। যতদিন এই রাস্তা ধরে সন্ধ্যেবেলা হাঁটতে এসেছি, দেখেছি প্রচুর লোকের ভিড়। কেউ দৌড়চ্ছে, কেউ হাঁটছে, কেউ বা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যায়াম করছে। কিছু বয়স্ক লোকজনকে ক্যারাটের প্যাঁচ অভ্যেস করতেও চোখে পড়েছে। এই রাস্তার এক পাশে নদী, আর এক পাশে উঁচু উঁচু ফ্ল্যাট বাড়ি। আর এই বাড়িগুলোর পেছনে শহরের প্রধান রাস্তা।
একদিন বাড়ি ফিরতে ১১ টা বেজে গেছিল, কিন্তু একটা জিনিস আবিস্কার করেছিলাম। নদীর ধারের আলো থেকে শুরু করে উঁচু বাড়িগুলোর মাথার আলো নিভে যায় ঠিক রাত সাড়ে দশটায়। তখন যে ঘুমনোর সময়, আমাদের সাথে সাথে শহরেরও।