“কতো তাড়াতাড়ি তুমি টিকিট কাটতে পারবে?” ফোনটা এলো আমার স্যারের স্ত্রীর কাছ থেকে ২৯শে নভেম্বর সকালে। আমি ওনাকে ম্যাডাম বলে ডাকি, তাই এখানেও ম্যাডাম লিখছি।
“আজকেই কাটতে পারি”, আমি বললাম। উত্তরটা দিয়ে বুঝতে পারলাম বুকের ভেতরটা ধুকপুক করছে।
“বেশ, এখুনি একটা টিকিট কেটে নাও। এখান থেকে বেরোবার পাস মনে হয় জোগাড় হয়ে যাবে।” উনি বললেন।
প্রতিটা অঞ্চলে একটা করে ছোটো প্রশাসনিক অফিস তৈরি হয়েছিল সেই সময়। যাদের Haizhu জেলা থেকে বাইরে যাওয়া দরকার, তাঁরা এই অফিসে আবেদন করতেন। কারণ যথাযোগ্য মনে হলে এই অফিস থেকে একটা পাস দেওয়া হতো, যার নাম Exit Pass। এই পাস দেখাতে হতো ব্রিজের নীচে পাহারারত পুলিশদের, তবেই জেলা থেকে বাইরে যাবার অনুমতি মিলতো। এর আগেও ম্যাডাম অনেকবার চেষ্টা করেছিলেন আমার জন্য এই পাস জোগাড় করার। এমনকি নিজেকে অসুস্থ প্রমাণ করার তাগিদে কলকাতার ডাক্তার বন্ধুর থেকে চিঠি পর্যন্ত আনিয়েছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি। বলা হয়েছিল এই রোগ এমন কিছু মারাত্মক নয়, যে আমাকে এখুনি বাড়ি যেতে হবে।
তাই এবার পাস পাবার কথায় আবার চাঙ্গা হয়ে উঠলাম। টিকিট কাটলাম আবার সেই Thai Airways এর। এবারের টিকিট ৩ ডিসেম্বরের, আবার একটা শনিবার। কারণ Thai Airways এর এই রুটে তখন সপ্তাহে একটাই প্লেন, সেটা শনিবার। ২৬ এর শনিবার তো হল না, পরের শনিবার দেখা যাক। একই রুট, ভাড়া পড়ল ৪৫৫৮ RMB, মানে প্রায় ৪৫০০০ টাকার একটু বেশী। টিকিট কেটে সঙ্গে সঙ্গে ম্যাডামকে পাঠালাম।
“এটা তো ৩ তারিখের টিকিট”, একটু পরেই ওনার ফোন এলো।
“হ্যাঁ, এটা ছাড়া তো আর কোন রুট আমার জানা নেই। আগের বারও এটাই কেটেছিলাম।” আমি জানালাম।
“কিন্তু Exit Pass যদি পাওয়া যায়, সেটা শুধু মাত্র সেই দিনের জন্যই ভ্যালিড থাকবে। মানে, যদি আজকে পাস জোগাড় হয়, তাহলে তোমাকে আজকেই রাত ৮টার মধ্যে এই জেলা থেকে বেরিয়ে যেতে হবে।”
“কিন্তু আজকে বেরিয়ে গিয়ে আমি থাকবো কোথায় ৩ তারিখ অবধি?” জিজ্ঞাসা করতেই হল। তারপর বললাম, “আমি যদি এখান থেকে আজ বেরিয়ে যেতে পারি, এয়ারপোর্টের কাছে কোন হোটেলে কয়েকটা দিন থেকে যাবো। তারপর ৩ তারিখের প্লেন ধরবো।”
“হোটেলে থাকা যাবে না। এই জেলা থেকে যাওয়া লোকজনকে হোটেলে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। তারপর তুমি বিদেশী। এখানে সব হোটেল বিদেশীদের রাখে না। সমস্যা হল পাস পাওয়া গেলে আজকেই পাওয়া যাবে। ৩ তারিখের পাস আবার দেবে কিনা, সেটা জানি না।”
আমি বললাম, “আরও একটা ব্যাপার আছে। এখন ভারতে ঢুকতে গেলে আমাকে ৪৮ আর ২৪ ঘণ্টার কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিতে হবে। সেটাও তো করাতে হবে।” এটা ঠিক যে সেই সময় দেশে ঢোকার সময় আমি কোন প্লেনে আসছি, কোথা থেকে আসছি, কোথায় যাবো – এই সবের সাথে ৪৮ আর ২৪ ঘণ্টার কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট দিল্লি এয়ারপোর্টের একটা পোর্টালে জমা দিতে হতো।
“বুঝতে পারছি। ঠিক আছে, আমি কথা বলে দেখি অফিসে, কি বলে। তুমি ব্যাগ প্যাক করে রেখো।”
ব্যাগ প্যাক করতে বেশিক্ষণ লাগবে না, আমি জানি। তাই দুপুরে খেয়ে একটু শুলাম। ঘুম হল না ভালো মতো। খালি মনে হতে লাগলো, এবারও পাস পাওয়া যাবে না। টিকিটটা আবার ক্যানসেল করতে হবে।
বিকেল তখন ৪টে, এক কাপ কফি খেতে খেতে কি মনে হল, ইন্ডিয়া গভর্নমেন্টের এন্ট্রি পলিসিটা চেক করতে বসলাম। আর সেটা করতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম, গতকাল থেকে দিল্লি এয়ারপোর্টের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভারতে ঢোকার আগে এখন আর কোন কিছুর প্রয়োজন নেই, তবে সাবধানতা বশত প্লেনের ২% লোকের কোভিড টেস্ট হবে এয়ারপোর্টে। তার মানে আমার আর এখানে কোভিড টেস্ট করানোর প্রয়োজন নেই।
এবার দেখতে বসলাম আজকের রাতের বা আগামীকালের কোন প্লেনের টিকিট পাওয়া যায় কিনা। একটা রুট পেয়েও গেলাম।
কালকে, মানে ৩০ নভেম্বর সকালে Cathay Pacific এর একটা ফ্লাইট আছে, যেটা এখান থেকে সকাল ১১ টায় ছেড়ে দুপুর ১২ টা নাগাদ হংকং পৌঁছবে।
হংকং থেকে বিকেল ৪ টে ০৫ মিনিটে Cathay Pacific এর আর একটা ফ্লাইট নিয়ে যাবে ব্যাংকক, পৌঁছবে স্থানীয় সময় বিকেল ৬ টা ১৫ তে।
ব্যাংকক থেকে Indigo র ফ্লাইট আছে রাত ৩ টে ৪৫ এ, যেটা কলকাতা পৌঁছবে ভোর ৪ টে ৫০ মিনিটে।
মাথায় এলো না যে আমাকে দু’বার ফ্লাইট পালটাতে হবে, দুটো রাত জাগতে হবে। আবার টিকিট কাটলাম, এই নিয়ে তৃতীয় বার। এবার ভাড়া পড়ল ৩৮৫০ RMB, মানে প্রায় ৪০০০০ টাকার মতো। আগের Thai Airways এর টিকিটটা ক্যানসেল করলাম না। সব কিছু এখন অনিশ্চিত, কেবলমাত্র আমার বাড়ি ফেরার ইচ্ছেটা ছাড়া।
ম্যাডামকে জানালাম সঙ্গে সঙ্গে, সাথে সাথে চলছে আমার প্যাকিং। ঘড়িতে তখন বিকেল ৫টা।
ম্যাডাম বললেন, “আমি এখুনি আসছি। তোমার টিকিট প্রিন্ট করে নিয়ে আসছি বাড়ি থেকে। তুমি ১০ মিনিট পরে আমার জন্য তোমার বিল্ডিঙের নীচে অপেক্ষা করো। নিজের পাসপোর্টটা নিয়ে এসো। আমরা একসাথে অফিসে যাবো।”
দশ মিনিট লাগলো না, তিন মিনিটের মধ্যে আমি নীচে নেমে গিয়েছিলাম। ম্যাডাম এসেছিলেন সাত মিনিটের মাথায়। অফিস বেশী দূরে নয়। সেখানে গিয়ে একটা ফর্ম ফিলাপ করতে হল। ম্যাডামই করলেন সব, আমি শুধু সই করলাম। চাইনীজে লেখা, কিছু বুঝবো না আমি, বোঝার দরকারও নেই। তখন এমন অবস্থা আমার, যদি কেউ বলতো সাদা কাগজে সই করে দিতে, আমি তাও করে দিতাম।
অবশেষে মিলল Exit Pass। সেটা হাতে নিয়ে বিজয় গর্বে আমি আর ম্যাডাম যখন অফিসের বাইরে এসে দাঁড়ালাম, তখন ঘড়িতে বাজছে বিকেল সাড়ে ৫ টা। হাতে আর আড়াই ঘণ্টা সময়, রাত ৮টার মধ্যে এখান থেকে বেরোতে হবে।
ম্যাডাম জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার প্যাকিং কতদূর?”
“হয়ে গেছে। বেশী কিছু নেবার নেই।”, সত্যি, শুধু ক্যামেরা আর তার জিনিসপত্র, আর আমার ল্যাপটপ – এই দুটো তো শুধু নেবার।
“বেশ, আমি একটু বাড়ি যাচ্ছি এখন। ৭টা নাগাদ তোমার ফ্ল্যাটে আসছি। আমি ট্যাক্সির সাথে কথা বলে রাখছি। তোমাকে ব্রিজের ওপার থেকে তুলে নেবে। তুমি রেডি হয়ে থেকো। এবার শুধু একটাই চিন্তা রয়ে গেলো।”
“কি?” প্রশ্নটা করে বুঝতে পারলাম গলা দিয়ে ভাল করে আওয়াজ বেরোচ্ছে না।
“তুমি যখনই Haizhu জেলা থেকে বাইরে বেরোবে, তখনই তোমার QR কোড হলুদ হয়ে যাবে। অন্তত অনেক লোকের কাছে তাই শুনেছি। তার কারণ তুমি যে জেলা থেকে যাচ্ছ, সেখানে কোভিড পরিস্থিতি খারাপ। তাই হলুদ কোড মানে তোমাকে টেস্ট করিয়ে প্রমাণ করতে হবে তুমি কোভিড পসিটিভ নও। সেই টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে তোমার কোড আবার সবুজ হয়ে যাবে। কিন্তু সমস্যা হল, এই হলুদ কোড নিয়ে তোমাকে এয়ারপোর্টে ঢুকতে দেবে না।”
“তাহলে কি হবে?”
“আমিও ঠিক জানি না। এইটুকু রিস্ক তো থেকেই যাচ্ছে। তবে যদি এমনটা হয়, তাহলে তোমাকে এয়ারপোর্ট এর কাছাকাছি কোন জায়গা থেকে টেস্টিং করাতে হবে। ওয়েট করতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত তোমার কোড সবুজ হয়, তারপর এয়ারপোর্ট এ ঢুকতে হবে।”
আমি চুপ করে আছি দেখে উনি বললেন, “আবার কিছু নাও হতে পারে। এতগুলো কাজ যখন হয়েছে, এটাও হয়ে যাবে। কিন্তু এর পর থেকে যাই হোক না কেন, তোমাকে ঠাণ্ডা মাথায় একলা সব কিছু সামলাতে হবে। পারবে তো?”
আমি বললাম, “পারতে তো হবেই। দেখা যাক, কি হয়।”
ঘরে ফিরে এসে আরও একবার সুটকেসটা ভালো করে দেখে নিলাম। পিঠের ব্যাগ দুটো – একটায় ল্যাপটপ আর কিন্ডল, আর একটায় ক্যামেরা। কিছু খেতে হবে। এক প্যাকেট বাদাম ল্যাপটপের ব্যাগে নিয়ে নিলাম। যদি এর পর আর কিছু পাওয়া না যায়। চি কে ফোন করে জানিয়ে দিলাম আমি আসছি, অন্তত আসার চেষ্টা করছি। দেখা যাক, কলকাতা পৌঁছতে পারি কিনা। এখুনি বাড়িতে জানানোর দরকার নেই, ব্যাংকক থেকে ফ্লাইটে ওঠার আগে বাড়িতে জানালেই হবে। তারপর শুরু হল অপেক্ষা।

স্যার আর ম্যাডাম দু’জনেই এলেন, তখন ঘড়িতে বাজছে সন্ধ্যে ৭টা। ঘরে ঢুকে দু’জন দুটো কাজে লেগে গেলেন। ম্যাডাম চেক করতে থাকলেন, আমি সব ইলেক্ট্রিক জিনিসের সুইচ বন্ধ করেছি কিনা। না করা থাকলে সেগুলো করে দিতে লাগলেন উনি। ফ্রিজ আমি ভেবেছিলাম বন্ধ করে দিয়ে যাবো, কিন্তু ক’দিন আগেই অনেক বাজার করেছি। সব্জি, ফল, মাংস – সব ফ্রিজে ভরা। সব কিছু এতো তাড়াতাড়ি ঘটে চলেছে যে আমি ফ্রিজ ফাঁকা করে, পরিষ্কার করে যে বন্ধ করবো, তা আর করা হয়ে ওঠেনি। ম্যাডাম বললেন, বন্ধ করার দরকার নেই। বাইরে যা শুকনো খাবার পড়ে ছিল, উনি সব ফ্রিজে ঢুকিয়ে দিলেন, যাতে পিঁপড়ে না হয়।

আর আমার স্যার – উনি চেক করছিলেন ডাস্টবিনগুলো। সেগুলোতে প্যাকেট পরানোই ছিল, উনি সেগুলো হাতে নিয়ে নিলেন, যাবার সময় বাইরে ফেলে দেবেন। না হলে ওগুলো থেকে গন্ধ ছাড়বে ক’দিন পর থেকেই। সব কিছু সেরে যখন ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে, চাবির গোছা স্যার এর হাতে দিয়ে, বাইরে এসে দাঁড়ালাম তখন সাড়ে ৭টা বাজে।
ম্যাডাম বললেন, “হেঁটে যাবার দরকার নেই, সময় লেগে যাবে। তোমার ই-বাইক টা নিয়ে নাও। সামনে সুটকেসটা বসিয়ে নিলেই হবে।”
সেই মতোই করা হল। ম্যাডাম বসলেন ড্রাইভিং সিটে, সামনে রাখা হল সুটকেস, আর পেছনে বসলাম আমি। স্যার যাবেন না, উনি এখান থেকেই আমাদের বিদায় জানালেন। ম্যাডাম ফোন করলেন ট্যাক্সি ড্রাইভারকে। সে জানালো, ব্রিজ পেরোনোর দরকার নেই। ব্রিজের মুখে পুলিশের যে ঘেরাও আছে, সে ট্যাক্সি নিয়ে ঠিক তার বাইরে অপেক্ষা করছে।
আমি আর ম্যাডাম এগিয়ে গেলাম সশস্ত্র পুলিশ প্রহরার দিকে। ম্যাডাম অফিসারকে Exit Pass টা দেখালেন, সঙ্গে আমি দেখালাম আমার পাসপোর্ট। বলা হল, মাস্ক খুলতে। অফিসার পাসপোর্টের সাথে আমার মুখ মেলালেন। ভিসার স্ট্যাম্প মারা পাতাগুলো উলটে পালটে দেখলেন। আরও দু’জন অফিসার এর মধ্যে এসে হাজির হয়েছেন। মোবাইলে শেষ QR কোডটা দেখালাম। এক মিনিট -দু’ মিনিট।
জীবনের সেই ১২০ সেকেন্ড আমি চাইলেও কোনোদিন ভুলতে পারবো না। অন্ধকার রাস্তায়, সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর সামনে দাঁড়িয়ে, চিন্তা হচ্ছিল – এতদূর এসে আবার ফিরে যেতে না হয়। আবার যেন আমাকে টিকিট ক্যানসেল করতে না হয়।
অবশেষে পাসপোর্ট ফেরত পেলাম। প্রথম অফিসার আদেশ দিলেন, গেট খুলতে।
ম্যাডাম অনুরোধ করলেন, তিনি এই লাইনের বাইরে যাবেন আমাকে ট্যাক্সিতে তুলে দিতে, দিয়েই ফিরে আসবেন। পুলিশ রাজী হল। ঘড়িতে তখন ৮ টা বাজতে আর ১০ মিনিট বাকি। আমাকে ট্যাক্সিতে বসানোর আগে ম্যাডাম বললেন, “সাবধানে থেকো। ওখানে গিয়ে নিজের খেয়াল রেখো। কোভিড পজিটিভ হয়ে যেও না, আর তাড়াতাড়ি ফিরে এসো।” আমার চোখের ভুল হলেও হতে পারে, কিন্তু অন্ধকার রাস্তায়, হাল্কা স্ট্রিট ল্যাম্পের আলোয়, ম্যাডামের চোখ, কেন জানি না মনে হয়েছিল, চকচক করছে।
আমাকে বসিয়ে নিয়ে ট্যাক্সি ছুটল এয়ারপোর্ট এর দিকে। ৪০-৪৫ মিনিট পর অন্ধকার শহরের প্রান্তে আলোকোজ্জ্বল Baiyun International Airport এর Terminal 2 চোখে পড়েছিল। পুরো রাস্তা আমি QR কোড চেক করিনি, করার সাহস পাইনি – যদি দেখি কোড হলুদ হয়ে গেছে। ট্যাক্সি থেকে নেমে একটু দাঁড়িয়েছিলাম। জোর করে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছিলাম। তারপর এগিয়ে গেলাম গেটের দিকে। এখানে এয়ারপোর্টে, আমাদের দেশের মতো, ঢুকতে টিকিট বা পরিচয় পত্র দেখাতে হয় না। অন্তত এর আগে যতবার গেছি, তাই দেখেছি। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। কেউ কিছু দেখতে চাইলো না – QR কোডও না। ঢুকে পড়লাম এয়ারপোর্টে।
পরে জানতে পেরেছিলাম, আমি চলে আসার পরের দিন থেকে, এয়ারপোর্টে ঢোকার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি শুরু হয়। ঢোকার আগে টিকিট আর কোড দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়। হলুদ আর লাল QR কোড থাকা মানুষদের ঢুকতে বারণ করে দেওয়া হয়।
সেদিন ভেতরে ঢুকে প্রথমেই চেক করেছিলাম – কাল Cathay Pacific এর CX983 প্লেন ঠিক সময়েই ছাড়বে, সকাল ১১টায়। চারপাশে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেছিলাম – পৃথিবীর অন্যতম ব্যস্ত এক এয়ারপোর্টে সেদিন চোখে পড়েছিল হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী। সমস্ত খাবারের দোকান বন্ধ। সেই রাতটা উপোষ করা ছাড়া উপায় ছিল না।
আর আমার QR কোড? একটা চেয়ারে গুছিয়ে বসে, জিনিসপত্র রেখে, মোবাইল খুলে দেখলাম সবুজ QR কোড জ্বলজ্বল করছে। কাল সকালে, বিদায় চীন। আমি ফিরছি তাহলে।